কক্সবাজার উপকূলে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত, চট্টগ্রাম-পায়রায় ৮

img

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মোখার গতিবেগ আরও বাড়তে শুরু করেছে । সেই সঙ্গে উপকূলের সঙ্গে কমছে এর দূরত্ব । এমন অবস্থায় কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরসমূহকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে । একই সঙ্গে চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৮ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে ।

 শনিবার দুপুর সাড়ে ১২ টায় সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ঘূর্ণিঝড় নিয়ে এক সভা শেষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান এ তথ্য জানান ।

  দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী বলেন, রবিবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড়টি । পূর্ব প্রস্তুতি হিসাবে গতকাল শুক্রবার রাত থেকেই কক্সবাজার এবং চট্টগ্রাম জেলায় বিপদাপন্ন জনগণকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা শুরু হয়েছে ।  

এনামুর রহমান বলেন, সবচেয়ে বিপদের সম্মুখীন সেন্টমার্টিন দ্বীপে অবস্থানরত মানুষের নিরাপত্তায় গতকালই সর্বাত্মক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে । সেখানে অবস্থানরত অন্তত ৮ হাজার ৫০০ মানুষকে সর্বোচ্চ জলোচ্ছ্বাস মাত্রার সুপার সাইক্লোন মোকাবিলায় সক্ষম ৩৭টি অবকাঠামোয় নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া হয়েছে ।   তিনি বলেন, আগেভাগেই সেখানকার সকল মজবুত- নিরাপদ অবকাঠামোর হোটেল- রিসোর্ট, সব সরকারি বেসরকারি উপযুক্ত অবকাঠামো আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য উপজেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয় । এরপরও প্রয়োজনীয়তা সাপেক্ষে সেখানকার মানুষকে উদ্ধার করে টেকনাফে নিয়ে আসার জন্য বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড প্রস্তুত রয়েছে । অতিবৃষ্টিতে পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে থাকা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও বান্দরবানের সংশ্লিষ্ট স্থানসমূহেও প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে ।   এর আগে গতকাল শুক্রবার রাত থেকে কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত এবং পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি দেখিয়ে যেতে বলা হয় ।  

এর আগে আজ শনিবার সকাল সাড়ে নয়টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ স্বাক্ষরিত বিশেষ বিজ্ঞপ্তি-১৪-তে জানানো হয়, পূর্ব- মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ মোখা ’ উত্তর- উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে । ঘূর্ণিঝড় মোখার গতিবেগ আরও বাড়তে শুরু করেছে । এটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮১৫কি.মি. দক্ষিণ- দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৪৫কি.মি. দক্ষিণ- দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৮৫কি.মি. দক্ষিণ- দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৪৫কি.মি দক্ষিণে অবস্থান করছে ।   এটি আরও উত্তর- উত্তরপূর্বে দিকে আগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে রবিবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে কক্সবাজার- উত্তর মায়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে পারে । শনিবার রাত থেকে চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকায় অতি প্রবাল ঘূর্ণিঝড় আগ্রভাগের প্রভাব শুরু হতে পারে ।   আরও পড়ুন মোখা মোকাবিলায় চট্টগ্রামে চিকিৎসক- স্বাস্থ্যকর্মীদের ছুটি বাতিল   অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৭৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে । কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুদ্ধ রয়েছে ।


এই বিভাগের আরও খবর