মির্জা ফখরুলই স্বীকার করেছেন একদফা দাবি আদায় অসম্ভব: তথ্যমন্ত্রী

img

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার বক্তব্যেই স্বীকার করে নিয়েছেন যে, তাদের একদফার দাবি আদায় সম্ভব নয়। এই মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

মন্ত্রী হাছান মাহমুদ রবিবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবের গতকালের  বক্তব্যে এটি স্পষ্ট যে, তাদের এক দফা আন্দোলনের দাবি আদায় সম্ভবপর নয়। এটি যে অসম্ভব, এটি যে কঠিন কাজ, তিনি তার বক্তব্যের মাধ্যমে তা স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে, একদফার আন্দোলনের সামনে কঠিন সময় আসছে। উনারা তো বহু আগে থেকেই একদফা আন্দোলনের মধ্যে আছেন। সেটি একবার গরুর হাটে মারা গেছে, তারপর আগস্ট মাসের আগে জোর একদফা আন্দোলন শুরু করবে বলেছিল। সেটিও হালে পানি পায়নি। এখন তাদের আন্দোলনের হাট তো ভেঙে গেছে। শুধু কর্মীদেরকে চাঙ্গা রাখার জন্য তারা এ সমস্ত কথাবার্তা বলছে।’

বিএনপি নেতা রুহুল কবীর রিজভীর ‘আন্দোলনের জোয়ারে আওয়ামী লীগ কোথায় যাবে’ মন্তব্য নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তথ্য সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কোথাও যাবো না, আমরা এই দেশেই আছি এই দেশেই থাকবো। রিজভী সাহেবরা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন পাকিস্তানে যাবেন, না অন্য কোথাও যাবেন, না এখানে থাকবেন। কারণ উনাদের মহাসচিব বলেছেন যে, পাকিস্তানই ভালো ছিলো।’

জি-২০, জো বাইডেন, ম্যাক্রোঁ প্রসঙ্গ : ভারতে জি-২০ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর যোগদান প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ জি-২০ সদস্য না হওয়া সত্ত্বেও জি-২০ বর্তমান সভাপতি ভারত উপমহাদেশ থেকে শুধু বাংলাদেশকে অর্থাৎ আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে সেখানে আমন্ত্রণ জানিয়েছে, উপমহাদেশের আর কোনো রাষ্ট্রনায়ককে ডাকা হয়নি। সেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্তÍ সফল ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।’

হাছান মাহমুদ বলেন, এছাড়া আপনারা দেখেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নিজেই প্রধানমন্ত্রী এবং তার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের সাথে সেলফি তুলেছেন। কুশল বিনিময়সহ ছোটখাটো আলোচনাও হয়েছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর সাথে আরব আমিরাত ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টদের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছে। অন্যান্য রাষ্ট্রনায়কদের সাথেও তার সাক্ষাৎ এবং সাইডলাইনে আলোচনাও হয়েছে। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রীর এ সফর অত্যন্ত সফল হয়েছে। জো বাইডেনের সাথে সেলফি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ছবি অনেক কথা বলে। এই ছবির ভাষা নিশ্চয়ই সাংবাদিক এবং বোদ্ধা ব্যক্তিরাও বুঝতে পারছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এবং আগামী দিনে আরো ঘনিষ্ঠ হবে।’

রোববার সন্ধ্যায় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বাংলাদেশে আসবেন, প্রধানমন্ত্রী তাকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানাবেন উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণেই ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বাংলাদেশে আসছেন। ক’দিন আগে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ ঘুরে গেছেন। এছাড়াও ক’দিন আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে দু’দিনব্যাপী নিরাপত্তা সংলাপ হয়েছে। এতে স্পষ্ট যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আমাদের যে বহুমাত্রিক সহযোগিতার সম্পর্ক রয়েছে সেটি আরো ঘনিষ্ঠ করার জন্য উভয় দেশ কাজ করছে। এই ঘটনা প্রবাহ যারা সঠিকভাবে অনুধাবন করতে পারেন তারা বোঝেন যে, বর্তমান সরকারের এবং প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সাথে বিশ্ব সম্প্রদায়ের গভীর সুসম্পর্ক আছে।’

ড. ইউনূসের ইস্যুতে সাবেক ডেপুটি এটর্নি জেনারেল এমরান ভূঁইয়ার মার্কিন দূতাবাসে আশ্রয় চাওয়া নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মার্কিন দূতাবাসে তিনি গিয়েছিলেন কিন্তু আশ্রয় পাননি। অপেক্ষা করে গেট থেকে চলে এসছেন। অনেকেই বলছে যে, তিনি হয়তো সপরিবারে মার্কিন ভিসা চাচ্ছেন, সেই কারণে এবং আলোচনায় থাকার জন্য এই নাটকটি সাজিয়েছেন। এতে প্রমাণিত যে বিভিন্ন মতাদর্শের মানুষ সরকারি কাজকর্মের সাথে যুক্ত আছেন। বিএনপি যে বলে বেছে বেছে শুধু দলীয় কর্মীদের আমরা বিভিন্ন জায়গায় পদে বসিয়েছি, সেটি যে সঠিক নয় এই ঘটনার মধ্যেই তা প্রমাণিত হয়।’

 


এই বিভাগের আরও খবর