আখেরি মোনাজাতে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও কল্যাণ কামনা

img

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনার মধ্য দিয়ে শেষ হলো এবারের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। মোনাজাতে মহান আল্লাহর দরবারে দুই হাত তুলে কেঁদে কেঁদে ক্ষমা চেয়েছেন মুসল্লিরা। পাপ থেকে মুক্তির জন্য আকুতি-মিনতি করেছেন লাখ লাখ মুসল্লি।

আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে ভোর থেকেই টঙ্গীর তুরাগতীরে লাখো মুসল্লির ঢল নামে। টঙ্গী শহর, ইজতেমাস্থল ও এর আশপাশ এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। যত দূর চোখ যায় শুধু মানুষ আর মানুষ দেখা যায়। এরই মাঝে বেলা সোয়া ১১টার কিছু আগে শুরু হয় আখেরি মোনাজাত। শেষ হয় বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে। মোনাজাত পরিচালনা করেন বাংলাদেশি মাওলানা হাফেজ মো. জোবায়ের।

হাফেজ জোবায়েরের সঙ্গে কয়েক লাখ মুসল্লি হাত তুলে মোনাজাতে অংশ নেন। মোনাজাতে আত্মশুদ্ধি ও গুনাহ মাফের পাশাপাশি দুনিয়ার সব বিপদ থেকে হেফাজতের জন্য আল্লার কাছে প্রার্থনা করেন তারা। মুসল্লিদের আল্লাহুম্মা আমিন ধ্বনিতে তুরাগ তীর এলাকায় অন্যরকম ধর্মীয় পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

এর আগে হিমেল হাওয়া ও কনকনে শীতকে উপেক্ষা করে মোনাজাতে অংশ নিতে ভোর থেকেই ইজতেমা ময়দানে জড়ো হতে থাকেন লাখ লাখ মুসল্লি। মানুষের ভিড়ে খিলক্ষেত, উত্তরা, জসিমউদ্দীন, আবদুল্লাহপুর, চৌরাস্তা, আশুলিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় যান চলাচল শিথিলতা করা হয়েছে। যানবাহন না পেয়ে অধিকাংশ মুসল্লি পায়ে হেঁটেই রওনা হন।

সকাল সাড়ে সাতটার আগেই ইজতেমা ময়দান কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়। ময়দানে জায়গা না পেয়ে লাখ লাখ মুসল্লি অবস্থান নেয় উত্তরা, আজমপুরসহ আশপাশের সড়কগুলোতে। মাঠ, পথ, বাড়ির ছাদ, তুরাগের দুই তীর, নৌকা, যানবাহনসহ যে যেখানে পেরেছেন মোনাজাতে শরিক হয়েছেন। পুরুষের পাশাপাশি অনেক নারীও মোনাজাতে অংশ নিয়ে চোখের পানি ফেলে আল্লাহার কাছে রহমত প্রত্যাশা করে দোয়া করেছেন।

আরবি ও বাংলায় করা মোনাজাতের সময় মুসল্লিরা হাত তুলে ‘আমিন’, ‘আল্লাহুম্মা আমিন’ ধ্বনি তোলেন। তাদের কান্নায় ‘কহরদরিয়া’ হিসেবে পরিচিত তুরাগ তীরসহ আশপাশের এলাকায় অন্যরকম ধর্মীয় পরিবেশ সৃষ্টি হয়। ইজতেমা ময়দান ও আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে লাগানো মাইকে ছড়িয়ে পড়েছিল সেই ধ্বনি।

প্রায় আধা ঘণ্টার মোনাজাতে দুনিয়া ও আখিরাতের শান্তি কামনার পাশাপাশি মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, শান্তি, সমৃদ্ধি, অগ্রগতি, সংহতি এবং দেশ ও জাতির সার্বিক কল্যাণ কামনা করা হয়। কয়েক হাজার বিদেশিসহ প্রায় ৩০ লাখ মুসল্লি আখেরি মোনাজাতে অংশগ্রহণ করেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।