অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলায় চারজনের মৃত্যুদণ্ড

img

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগের অধ্যাপক, লেখক ড. হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলায় চারজনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত।

ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আল-মামুনের আদালত বুধবার বেলা ১২টার দিকে এ রায় দেন। গত ২৭ মার্চ আজ রায়ের জন্য দিন ঠিক করেছিলেন ওই আদালত।

“দণ্ডিত আসামিরা হলেন— জেএমবির সূরা সদস্য মিজানুর রহমান ওরফে মিনহাজ ওরফে শফিক ও আনোয়ার আলম ওরফে ভাগ্নে শহিদ এবং জামায়াতে মুজাহিদুন বাংলাদেশের (জেএমবি) সূরা সদস্য সালাহউদ্দিন ওরফে সালেহীন ও নুর মোহাম্মদ ওরফে সাবু। দণ্ডিতদের মধ্য শেষের দুই জন পলাতক আছেন।”

এছাড়া আসামি রাকিবুল হাসান ওরফে হাফিজ মাহামুদ ক্রাসফায়ারে নিহত হয়েছেন।

এদিকে রায় উপলক্ষে বুধবার সকালে আসামিদের নেওয়া হয় আদালতে। জোরদার করা হয় আদালত প্রাঙ্গনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

“২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অমর একুশে বইমেলা থেকে বাসায় ফেরার পথে দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের হামলায় জখম হন বহুমাত্রিক লেখক ড. হুমায়ুন আজাদ। হামলার পর তিনি ২২ দিন ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) এবং ৪৮ দিন ব্যাংককে চিকিৎসাধীন ছিলেন। কয়েক মাস চিকিৎসা নেওয়ার পর ২০০৪ সালের আগস্ট গবেষণার জন্য জার্মানিতে যান এই লেখক। ওই বছরের ১২ আগস্ট মিউনিখে নিজের ফ্ল্যাট থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।”

হুমায়ুন আজাদের ওপর হামলার পরের দিন তার ছোট ভাই মঞ্জুর কবির রমনা থানায় একটি হত্যাচেষ্টার মামলা করেন। পরে আদালতের আদেশে অধিকতর তদন্তের পর সেটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়।

“সিআইডির পরিদর্শক লুৎফর রহমান মামলাটি তদন্তের পর ২০১২ সালের ৩০ এপ্রিল পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। একই বছরের ১০ সেপ্টেম্বর তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। নিষিদ্ধ ঘোষিত জেএমবির সদস্যরা হুমায়ুন আজাদের ওপর ওই হামলা চালিয়েছিল বলে পরবর্তীতে পুলিশের তদন্তে উঠে আসে।”

“আসামিরা হলেন- জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) শুরা সদস্য মিজানুর রহমান ওরফে মিনহাজ ওরফে শফিক, আনোয়ার আলম ওরফে ভাগ্নে শহিদ, সালেহীন ওরফে সালাহউদ্দিন, হাফিজ মাহমুদ ও নূর মোহাম্মদ ওরফে সাবু। আসামিদের মধ্যে মিনহাজ এবং আনোয়ার কারাগারে আছে। সালাহউদ্দিন ও নূর মোহাম্মদ পলাতক। হাফিজ মাহমুদ কথিত বন্দুকযুদ্ধে যান। এ মামলায় মিনহাজ ও আনোয়ার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ৫৮ সাক্ষীর মধ্যে তদন্ত কর্মকর্তাসহ ৪১ জন সাক্ষ্য দেন আদালতে।”

“এদিকে ২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রিজনভ্যান থেকে তিন আসামিকে ছিনিয়ে নেয় জঙ্গিরা। তাদের দুই জন হলেন- সালাহউদ্দিন ওরফে সালেহীন এবং রাকিবুল হাসান ওরফে হাফিজ মাহামুদ। এদের মধ্যে রাকিব ওইদিন রাতে ধরা পড়েন এবং পরে ক্রস ফায়ারে নিহত হন।”