ভয়াবহ বন্যায় শতাধিক মানুষের মৃত্যু নাইজেরিয়ায়

img

আন্তর্জাতিক প্রতিবেদক: 

এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে নাইজেরিয়ায়। এছাড়াও আরও ১৩ লাখ লোক বাস্তুচ্যুত ও দুই লাখের বেশি বসত-বাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী বলেছেন, এ বন্যা ‘প্রবল’ দুর্যোগের রূপ নিয়েছে, সতর্ক করা সত্ত্বেও অনেক রাজ্য পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয়নি।

সংশ্লিষ্ট গবেষকদের মতে নভেম্বরের শেষ পর্যন্ত এ বন্যা অব্যাহত থাকবে বলে মনে হচ্ছে। যদিও নাইজেরিয়ায় মৌসুমি বন্যা দেখা যায় তবে এবার পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে বিবিসি জানিয়েছে।

অস্বাভাবিক ভারি বৃষ্টি ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এ বছর এমন অস্বাভাবিক বন্যা দেখা দিয়েছে বলে দাবি করছে দেশটির সরকার। অপরদিকে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সরকারের দুর্বল পরিকল্পনা অবকাঠামো ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

গ্রীষ্মের প্রথম দিকে বন্যা শুরু হয়েছে দেশটিতে। তখন থেকেই কৃষি জমির বিশাল অংশ ডুবে ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এমনকি বন্যার কারণে খাদ্য ও জ্বালানি সরবরাহে বিঘ্ন ঘটার পাশাপাশি রোগের বিস্তার বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

নাইজেরিয়ার দুর্যোগ ও ত্রাণমন্ত্রী সাদিয়া ওমর ফারুক রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে বসবাসরত লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি আরও জানিয়েছেন, কর্তৃপক্ষ দুর্গতদের খাদ্য ও অন্যান্য সমর্থন, সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। ‘সমন্বিত উদ্যোগ’ ও আগাম সতর্ক করা সত্ত্বেও অনেক রাজ্য সরকার বন্যার জন্য ‘প্রস্তুতি নেয়নি’।

এবারের বন্যায় নাইজেরিয়ার ৩৬টি রাজ্যের মধ্যে ২৭টি দুর্যোগ কবলিত হয়েছে। প্রতি বছর বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর লোকজন নিচু সমভূমি এলাকায় তাদের বাড়িগুলোতে ফিরে আসে, অনেকেরই যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। এটি সমস্যার একটি অংশ হয়ে আছে।

গত বছর থেকে নাইজেরিয়ার অর্থনৈতিক পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করে, সর্বকালের সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতির মধ্যে বহু মানুষ পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে চলতে হিমশিম খাচ্ছে।

গত মাসে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচী ও জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা বলেছে, অনাহারের বিপর্যয়মূলক উচ্চ ঝুঁকির মধ্যে থাকা ছয়টি দেশের মধ্যে নাইজেরিয়াও আছে। নাইজেরিয়ার আবহাওয়া সংস্থা সতর্ক করে বলেছে, দক্ষিণের কিছু রাজ্যে নভেম্বরের শেষ পর্যন্ত বন্যা অব্যাহত থাকতে পারে।