রসুনের নানাবিদ প্রাকৃতিক গুনাগুন

img

বিশেষ প্রতিবেদক:

রসুন একটি মসলা জাতীয় খাদ্য উপাদান। রান্নার মসলা হিসেবে এটির ব্যবহার হয়। রান্নায় স্বাদকে বাড়ানোর ক্ষেত্রে শুধু নয়, এর পুষ্টিগুণ একে করেছে মসলার ভিতর অন্যতম। বিশ্বের প্রায় প্রতিটি জাতিই রসুনকে বিভিন্ন রোগ নিরায়মের জন্য ব্যবহার করে আসছে।

 ভেষজ ব্যাবহারঃ

প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিকঃ রসুন প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে।গবেষণায় দেখা গেছে, খালি পেটে রসুন অ্যান্টিবায়োটিক এর মত কাজ করে।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন করেঃ রসুন উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

হজম ক্ষমতা বাড়ায়ঃ খালি পেটে রসুন খাওয়ার ফলে যকৃত এবং মূত্রাশয় সঠিকভাবে নিজ নিজ কার্য সম্পাদন করে। এর ফলে পেটের বিভিন্ন সমস্যা দূর হয়। রসুন হজম ও ক্ষুধার উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে। এটি ক্ষুদামদা ভাব দূর করতে অনেক সহায়ক।

বিস্নতা দূর করেঃ রসুন স্ট্রেস দূর করতেও সক্ষম। স্ট্রেস বা চাপের কারনে আমাদের গ্যাস্ট্রিক এর সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাছাড়া পরিপাকতন্তেরও নানা সমস্যা দূর করে এই রসুন।

শরীলের ক্ষতিকর উপাদান নিয়ন্ত্রন করেঃ  শরীরকে ডি-টক্সিফাই করতে রসুন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, রসুন প্যারাসাইট, কৃমি পরিত্রাণ, জিদ, সাঙ্ঘাতিক জ্বর, ডায়াবেটিস, বিষণ্ণতা এবং ক্যান্সার এর মত বড় বড় রোগ প্রতিরোধ করতে অনেক উপকারি। যক্ষ্মা, নিউমোনিয়া, ব্রংকাইটিস, ফুসফুসের কনজেশন, হাপানি, ইত্যাদি প্রতিরোধ করে।

ঠান্ডা জনিত সমস্যা সমাধানে রসুনঃ রসুন কফের জন্য অনেক উপকারি ঔধষ। খুব সামান্য তেলে ১/২ কোয়া রসুন ভেজে তা ১ টেবিল চামচ মধুর সাথে রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে খাবেন। এটা যদি নিয়মিত খান তাহলে বুকে জমে যাওয়া কফ থেকে রেহাই পাওয়া যাবে।

যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে রসুনঃ  যৌনতা বৃদ্ধির জন্য প্রতিদিন দু’কোয়া রসুন খাঁটি গাওয়া ঘি-এ ভেজে মাখন মাখিয়ে খেতে পারেন। খাওয়ার শেষে একটু গরম পানি বা দুধ খাবেন। এতে ভাল ফল পাওয়া যাবে।

কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রনে রসুনঃ রসুন কোলেস্টরল কমায়।প্রতিদিন কয়েকটি কোয়া কাঁচা বা আধা সিদ্ধ করে রসুন সেবনে কেলেস্টেরলের মাত্রা কম থাকে। রসুন হার্ট অ্যাটাকের ঝুকি কমাতে সাহায্য্য করে।শিরা-উপশিরায় প্লাক জমাতে রসুন বাধা প্রদান করে। শিরা-উপশিরার মারাত্নক রোগ অথেরোস্ক্লেরোসিসের হাত থেকে রসুন রক্ষা করে। শিরা-উপশিরায় রক্ত জমাট বাধাতেও সাহায্য করে।

ব্রনের সম্যসা সমাধানে রসুনঃ রসুন ব্রনের সমস্যায় অনেক সহায়ক হিসেবে কাজ করে। আবার অনেক সময় আমাদের শরীরে আঁচিল হয়ে থাকে, রসুনের রস আচিলের ক্ষেত্রে উপকার করে।

বাতের ব্যাথায় রসুনঃ রসুন বাতের রোগে অনেক উপকার করে থাকে। প্রতিদিন দু’কোয়া করে রসুন খেলে গিটের বাত সেরে যেতে পারে।

রক্ত পরিষ্কারে রসুনঃ প্রতিদিন সকালে রসুনের দুটি কোয়া ও এক গ্লাস পরিমাণ গরম পানি সেবন করতে হবে রক্ত পরিষ্কারের জন্য । এতে রক্ত পরিষ্কার হবে এবং ত্বক ভালো থাকবে।

রসুনের রাসায়নিক উপাদানঃ

রসুনে প্রচুর পরিমাণের রয়েছে ময়শ্চার, প্রোটিন, ফ্যাট, মিনারেল ফাইবার ও কার্বোহাইড্রেট। ভিটামিন ও মিনারেলের মধ্যে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, থিয়ামিন, রিবোফ্লোভিন, ভিটামিন সি।রসুনে  আরো আছে  আয়োডিন, সালফার ও ক্লোরিনও অল্প পরিমানে।

 ত্বকের যত্নে রসুনঃ

ত্বকের যত্নে রসুন, অবাক হচ্ছেন নিশ্চয়? কিন্তু ব্রণ এবং ব্রণের দাগ নিমিষে দূর করে দিতে পারে এই রসুন। এক কথায় ত্বকের যত্নে রসুনের ব্যবহার অপরিসীম।কেবল সাতদিন রসুন ও মধুর মিশ্রণ খেলে বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে শরীরকে অনেকটাই রক্ষা করা যায়।

মধু ও রসুনের এই মিশ্রণটি তৈরির প্রণালি চলুন জেনে নেই-

যেসব উপাদান লাগবে

           ১. একটি মাঝারি আকৃতির পাত্র।

           ২. মধু।

           ৩. তিন থেকে চারটি রসুন। (খোসা ছাড়ানো)

যেভাবে প্রণালি তৈরি করতে হবে

প্রথমে পাত্রের  মধ্যে রসুনের কোয়াগুলো থেতলে নিতে হবে। এরপর এর মধ্যে মধু ঢালতে হবে। এবারপাত্রের মুখ বন্ধ করে মিশ্রণটি ফ্রিজের মধ্যে সংরক্ষণ করতে হবে।

প্রতিদিন খালিপেটে মিশ্রণটি আধা চা চামচ করে খেতে থাকুন। ঠাণ্ডাজনিত সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য দিনে ছয়বার আধা চা চামচ করে এটি খেতে পারেন। এটি সংক্রমণ দূর করতে সাহায্য করবে।