নিজস্ব প্রতিবেদক:
ক্রেডিট কার্ডে আন্তর্জাতিক লেনদেনে যে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছিল, তা থেকে সরে এসেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে অনলাইনে ক্রেডিট কার্ডে বিদেশ থেকে কোনো ধরনের পণ্য ও সেবা কিনতে গ্রাহকদের নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করে হিসাব রাখার বাধ্যবাধকতা আর রইল না।
রবিবার প্রজ্ঞাপন দিয়ে নীতিমালা শিথিল করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে বলা হয়, লেনদেনে আলাদা ফরম লাগবে না। তবে অবৈধ লেনদেন বন্ধে ব্যাংকগুলোকে ব্যবস্থা নিতে হবে।
অর্থপাচার রোধ, অনলাইনে জুয়াখেলাসহ বিভিন্ন অবৈধ খাতে ব্যয় নিয়ন্ত্রণে গত ১৪ নভেম্বর কড়াকড়ি শর্ত আরোপ করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তখন বলা হয়েছিল, কার্ডে কী ধরনের লেনদেন হচ্ছে, গ্রাহকদের তারও হিসাব রাখতে হবে। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক আলাদা একটি ফরমও নির্দিষ্ট করে দেয়।
এতে ভোগান্তিতে পড়েন তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ব্যবসায়ীসহ সাধারণ গ্রাহকরা। এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়। গত শনিবার তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদও জানান, শিগগির এ কড়াকড়ি শিথিল করা হবে। বিভিন্ন মহলের চাপে ১০ দিনের মাথায় সেই শর্ত প্রত্যাহার করল বাংলাদেশ ব্যাংক।
সাধারণত একজন বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ডে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা ও ১২ হাজার ডলার পর্যন্ত ব্যবহারের সুযোগ পান। এর মধ্যে সার্কভুক্ত দেশে পাঁচ হাজার ডলার ও সার্ক বহির্ভূত দেশে সাত হাজার ডলার। কার্ডের মাধ্যমে বিদেশি লেনদেনেও এ সীমা প্রযোজ্য। তবে কার্ডের মাধ্যমে অনলাইন কেনাকাটায় প্রতিটি লেনদেনের সীমা সর্বোচ্চ ৩০০ ডলার। এভাবে ক্রেডিট কার্ড দিয়ে সীমার মধ্যে যে কোনো বাংলাদেশি চাহিদা মতো বৈধ কেনাকাটা করতে পারবেন। যা এখনো বহাল আছে।
রবিবার এ নিয়ে ব্যাংকগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরপরই প্রজ্ঞাপন জারি হয়। আর কার্ড দিয়ে ফেসবুক ও গুগলের সেবা মাশুল পরিশোধ নিয়ে যে সমস্যা হয়েছে, তা নিয়ে আগামী ২৮ নভেম্বর আবারও আলোচনায় বসবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত আগস্ট পর্যন্ত দেশে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১২ লাখ ৩ হাজার ৪২৭ জন। গত জুনে ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ১৩১ কোটি টাকা।